স্বাধীনতা সংগ্রামী নজরুল : ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এক অকুতোভয় সৈনিক
“স্বাধীনতা সংগ্রামী নজরুল: ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এক অকুতোভয় সৈনিক” গ্রন্থটি মূলত কাজী নজরুল ইসলামের জীবনের সেই অধ্যায়কে তুলে ধরে, যেখানে তিনি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে একজন অকুতোভয় সৈনিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। নজরুলের সাহিত্য, সংগীত, এবং সমাজ-রাজনীতিতে তার অগ্রণী ভূমিকা তাঁকে শুধু বাংলা সাহিত্যজগতেই নয়, ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসেও একটি উজ্জ্বল নাম করে তুলেছে।
এই গ্রন্থের প্রতিটি অধ্যায় নজরুলের জীবনের বিভিন্ন দিক, বিশেষ করে তাঁর রাজনৈতিক চেতনা, বিদ্রোহী কবিতা, এবং সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় চেতনা জাগ্রত করার প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করে। নজরুলের লেখায় সমাজের সব স্তরের মানুষের প্রতি সাম্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, এবং স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পেয়েছে। তাঁর কাব্যিক সত্তা, যা অত্যন্ত শক্তিশালী এবং গতিশীল, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।
নজরুল ইসলামকে “বিদ্রোহী কবি” বলা হয় তাঁর সেই সাহসী রচনার জন্য যা শাসকগোষ্ঠীর বিরোধিতা করে মুক্তিকামী মানুষের হৃদয়ে আশার সঞ্চার করেছিল। তাঁর কবিতা ও গান ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিল। নজরুলের “বিদ্রোহী” কবিতা এবং “ধুমকেতু” পত্রিকা ব্রিটিশ সরকারের ক্রোধের কারণ হয়েছিল এবং তিনি কারাবরণও করেন। কিন্তু তাঁর লড়াই থেমে থাকেনি, বরং তাঁর কণ্ঠ আরও জোরালো হয়ে উঠেছিল।
এই বইটি পাঠকদের কাছে নজরুলের সেই সংগ্রামী জীবনকে নতুন করে তুলে ধরতে চায়। এটি নজরুলের সাহিত্য এবং সংগীতের মাধ্যমে তাঁর স্বাধীনতার লড়াইকে বিশ্লেষণ করে, যেখানে তাঁর শক্তিশালী শব্দ এবং সুর ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে এক অমোঘ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। তাঁর রচনাগুলো আজও আমাদেরকে স্বাধীনতার অর্থ বুঝতে এবং তা রক্ষার জন্য প্রেরণা জোগায়।
গ্রন্থটি নজরুলের সাহিত্য ও সংগ্রামী জীবনকে সম্মান জানিয়ে তাঁর অবদানকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার একটি প্রচেষ্টা। তাঁর লেখা এবং কাব্যিক বিদ্রোহ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, একজন কবি কেবলমাত্র কাব্যের সীমায় আবদ্ধ থাকেন না; তিনি সময়ের প্রেক্ষিতে এক অমর সৈনিক হয়ে উঠতে পারেন, যাঁর কলম এক অদম্য অস্ত্র।